আসুন, জেনে নিই কি আছে রামপাল চুক্তিতে :
১. রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রাথমিকভাবে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০১ কোটি ডলার।
• এই অর্থের ৭০ শতাংশ ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে (এই ৭০ ভাগ ঋণের সুদ টানা এবং ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্ব বাংলাদেশের এবং সুদের হারও অজানা। এবং ধারণা করে নেওয়া যেতে পারে সেই সুদের হারের অঙ্কটাও তুলনামুলকভাবে কম হবে না)!
• বাকী ৩০ ভাগের ১৫ শতাংশ অর্থ দেবে বাংলাদেশের সরকারী কোম্পানি পিডিবি এবং বাকি ১৫ শতাংশ দেবে ভারতের কোম্পানি এনটিপিসি। অর্থ্যাৎ,
৮৫ শতাংশ বিনিয়োগ বাংলাদেশের আর মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ ভারতের।
এই প্রকল্পের জন্য পুরো জমি, অবকাঠামোগত ও আনুষঙ্গিক সবকিছু সরবরাহ করবে বাংলাদেশ। অথচ শেষ বিচারে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মালিকানা আর নিট মুনাফার ভাগীদার হবে মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়গকারী গোষ্ঠী (ভারত)! কেননা চুক্তি অনুযায়ী এই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পিডিবি কিনবে এনটিপিসির কাছ থেকে। আর যে নিট লাভ হবে সেটা ৫০ শতাংশ হারে পিডিবি ও এনটিপিসির (অথচ তাদের বিনিয়োগ মাত্র ১৫ শতাংশ) মধ্যে ভাগ হবে!!!
মগের মুল্লুক বলে কথা!!
২. এবার আসা যাক উৎপাদিত বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য প্রসঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী কয়লার ক্রয়মূল্যকে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাব অনুযায়ী ইতিমধ্যেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সরকারি পর্যায়ে ১৪৫ ডলার মূল্যে কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় পিডিবি তথা সরকারকে দেশের জনগণের জন্যে প্রতি ইউনিট ৮ দশমিক ৮৫ টাকা মূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে হবে।
অথচ পিডিবির সঙ্গে দেশীয় ওরিয়ন গ্রুপের যে ক্রয় চুক্তি হয়েছে তাতে এই কোম্পানির মাওয়ায় প্রতিষ্ঠিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা মূল্যে এবং খুলনার লবণচরা ও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রতিষ্ঠিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ৩ দশমিক ৮০ টাকা মূল্যে বিদ্যুৎ কেনা হবে!!!
পরিবেশগত ক্ষতির কথা বাদ দিয়ে যদি ধরেও নেই যে পরিবেশীয় ক্ষতির পরিমাণ কম, সেক্ষেত্রে এই বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির বোঝা কে বইবে?
এই বিপুল অঙ্কের অর্থ ঋণের সুদ আর উৎপাদিত বিদ্যুতের উচ্চমূল্য বইতে যে ভবিষ্যতে জনগণের উপর নিত্যনতুন করের খড়গ নেমে আসবে তাতে সন্দেহ নেই।
সবশেষে, দুটি প্রশ্ন। উত্তর চাই।
প্রশ্ন ১:
মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারী মালিক বনে যায় কিভাবে? মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করে নিট লাভেরঅর্ধেক কিভাবে ভারত নিয়ে যায়?
তদুপরি, চুক্তি অনুযায়ী কয়লা আমদানির দায়িত্ব বাংলাদেশের এবং ক্ষয়ক্ষতির দায় বহন করতে হবে কিন্তু বাংলাদেশেরই!! বিনিয়োগ ৪ আনা কিন্তু লাভের ভাগ ১৬ আনা তাদের জন্যে নির্ধারণ হয় কিভাবে?
প্রশ্ন ২ :
দেশীয় কোম্পানি যেখানে যথাক্রমে ৩ টাকা ৮০ পয়সা আর ৪ টাকা দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। সেখানে কেন একই ধরণের প্রযুক্তি ব্যাবহার করা আমাদের দেশের বাইরের একটি কোম্পানি থেকে দিগুণেরও বেশী দরে (৮ টাকা ৮৫ পয়সা) বিদ্যুৎ কিনতে হবে?
এই লাভের গুঁড় কে খাবে?
বন্ধুত্বের খাতিরে এত দেশপ্রেমের(!) বোঝা কে বইবে?
আমি এই সহজ হিসেবটা মেলাতে পারছি না। আপনারা কেউ পারলে মিলিয়ে দিয়ে যাবেন। ধন্যবাদ!
১. রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রাথমিকভাবে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০১ কোটি ডলার।
• এই অর্থের ৭০ শতাংশ ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে (এই ৭০ ভাগ ঋণের সুদ টানা এবং ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্ব বাংলাদেশের এবং সুদের হারও অজানা। এবং ধারণা করে নেওয়া যেতে পারে সেই সুদের হারের অঙ্কটাও তুলনামুলকভাবে কম হবে না)!
• বাকী ৩০ ভাগের ১৫ শতাংশ অর্থ দেবে বাংলাদেশের সরকারী কোম্পানি পিডিবি এবং বাকি ১৫ শতাংশ দেবে ভারতের কোম্পানি এনটিপিসি। অর্থ্যাৎ,
৮৫ শতাংশ বিনিয়োগ বাংলাদেশের আর মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ ভারতের।
এই প্রকল্পের জন্য পুরো জমি, অবকাঠামোগত ও আনুষঙ্গিক সবকিছু সরবরাহ করবে বাংলাদেশ। অথচ শেষ বিচারে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মালিকানা আর নিট মুনাফার ভাগীদার হবে মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়গকারী গোষ্ঠী (ভারত)! কেননা চুক্তি অনুযায়ী এই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পিডিবি কিনবে এনটিপিসির কাছ থেকে। আর যে নিট লাভ হবে সেটা ৫০ শতাংশ হারে পিডিবি ও এনটিপিসির (অথচ তাদের বিনিয়োগ মাত্র ১৫ শতাংশ) মধ্যে ভাগ হবে!!!
মগের মুল্লুক বলে কথা!!
২. এবার আসা যাক উৎপাদিত বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য প্রসঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী কয়লার ক্রয়মূল্যকে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাব অনুযায়ী ইতিমধ্যেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সরকারি পর্যায়ে ১৪৫ ডলার মূল্যে কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় পিডিবি তথা সরকারকে দেশের জনগণের জন্যে প্রতি ইউনিট ৮ দশমিক ৮৫ টাকা মূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে হবে।
অথচ পিডিবির সঙ্গে দেশীয় ওরিয়ন গ্রুপের যে ক্রয় চুক্তি হয়েছে তাতে এই কোম্পানির মাওয়ায় প্রতিষ্ঠিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা মূল্যে এবং খুলনার লবণচরা ও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রতিষ্ঠিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ৩ দশমিক ৮০ টাকা মূল্যে বিদ্যুৎ কেনা হবে!!!
পরিবেশগত ক্ষতির কথা বাদ দিয়ে যদি ধরেও নেই যে পরিবেশীয় ক্ষতির পরিমাণ কম, সেক্ষেত্রে এই বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির বোঝা কে বইবে?
এই বিপুল অঙ্কের অর্থ ঋণের সুদ আর উৎপাদিত বিদ্যুতের উচ্চমূল্য বইতে যে ভবিষ্যতে জনগণের উপর নিত্যনতুন করের খড়গ নেমে আসবে তাতে সন্দেহ নেই।
সবশেষে, দুটি প্রশ্ন। উত্তর চাই।
প্রশ্ন ১:
মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারী মালিক বনে যায় কিভাবে? মাত্র ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করে নিট লাভেরঅর্ধেক কিভাবে ভারত নিয়ে যায়?
তদুপরি, চুক্তি অনুযায়ী কয়লা আমদানির দায়িত্ব বাংলাদেশের এবং ক্ষয়ক্ষতির দায় বহন করতে হবে কিন্তু বাংলাদেশেরই!! বিনিয়োগ ৪ আনা কিন্তু লাভের ভাগ ১৬ আনা তাদের জন্যে নির্ধারণ হয় কিভাবে?
প্রশ্ন ২ :
দেশীয় কোম্পানি যেখানে যথাক্রমে ৩ টাকা ৮০ পয়সা আর ৪ টাকা দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। সেখানে কেন একই ধরণের প্রযুক্তি ব্যাবহার করা আমাদের দেশের বাইরের একটি কোম্পানি থেকে দিগুণেরও বেশী দরে (৮ টাকা ৮৫ পয়সা) বিদ্যুৎ কিনতে হবে?
এই লাভের গুঁড় কে খাবে?
বন্ধুত্বের খাতিরে এত দেশপ্রেমের(!) বোঝা কে বইবে?
আমি এই সহজ হিসেবটা মেলাতে পারছি না। আপনারা কেউ পারলে মিলিয়ে দিয়ে যাবেন। ধন্যবাদ!
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment.